Friday, October 10, 2008

Siddiki-r Sid Kete

সিদ্দিকীর সিঁদ কেটে

বাংলাদেশ জিতেছে। সাম্প্রতিক সময়ের নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে আমাদের ক্রিকেট টিম নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে। আগামীকালের (১০.১০.০৮) সংবাদপত্রগুলোতে ক্রীড়া সাংবাদিকদের সুললিত সাহিত্যিক ভাষায় জুনায়েদ-আশরাফুল-মাশরাফির বন্দনা ছাপা হবে, কোনো সন্দেহ নেই। সুতরাং এ বিষয়ে আমার মতো কীটাসাংবাদিকের (কীট+অসাংবাদিক) আর কিছু না বলাই ভালো। বরং অন্য কথা বলি।

জুনায়েদ সিদ্দিকীর খেলা দেখলাম; শুরুর দিকে অবশ্য দেখতে পারিনি, যখন টিভির সামনে বসি তখন জুনায়েদের রান ২৮ বলে ১১ - তামিম আউট। রহিমকে নিয়ে ছেলেটা ঢিমেতালে খেলে যাচ্ছে। তা যাক - রাণীক্ষেত মড়ক না লাগলেই হলো। বাংলাদেশের ইনিংসটা যখন শুরুর ফাস্ট বোলারদের পার হয়ে স্লো আর স্পিন বোলিংয়ের অংশে ঢুকল তখন জুনায়েদের একটা জিনিস দেখে খুব ভালো লাগলো - ছেলেটা নিয়মিত সিঙ্গেল রান তুলে রানের গতি চালু রাখছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যাটসম্যান এই জিনিসটা পারেনা (বা পারতে চায়না), তাদের মনে হয় ধারনা, শুধু চার-ছক্কাতেই দ্রুত রান ওঠে। অবশ্য কাপালী, সাকিব আর হালের রকিবুলকে এর বাইরে রাখতে আমার আপত্তি নেই।

ক্রিকেট খেলা যখন থেকে বুঝি, সেই থেকে আজ পর্যন্ত, আমার মতে, ক্রিকেটে ৩টি রেভোলুশন এসেছে - এক, জন্টি রোডসের ফিল্ডিং; দুই, জয়সুরিয়া-কালুভিথারানার পিঞ্চ হিটিং; আর তিন, মাইকেল বেভানের সিঙ্গেলস। অষ্ট্রেলিয়ার মাইকেল বেভানের কথা বলি। তার খেলা দেখতে যতই বিরক্তিকর লাগুক, সেই কিন্তু প্রথম দেখিয়েছে শুধু সিঙ্গেলস নিয়েও ম্যাচ জেতা যায়। ২৫০/২৬০ তুলতে অযথা মারামরি না করে এক/দুই করেও এই রান তোলা যায়। আর যদি টার্গেট বেশি হয়, তখন নাহয় একটু মারামারি কর - খারাপ বল তো আসবেই। প্রতিপক্ষের অধিনায়ক যেমন করেই মাঠ সাজাক না কেন, ফাঁক ফোকর তো থাকবেই। তাহলে ৬ বলে ৬টা ১ রান তুলতে অসুবিধা কোথায়! এমনও দেখেছি, স্কোরবোর্ডে লেখা - মাইকেল বেভান, ৪৩ বলে ৪৯ রান, চার - ১, ছয় - ০... কী আশ্চর্য!

সেখান থেকে শুরু। এখন তো বড়-মাঝারী খেলোয়াড়রাও ইনিসের মাঝে এসে সিঙ্গেলসই নেয়; কী দরকার ঝুকি নিয়ে আউট হবার! মনে আছে, '৯২-এর বিশ্বকাপে কোনো এক খেলায় ইমরান খান বেহুদা ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডারির কাছে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে গেলো। গ্যালারিতে কোনো এক রসিক কার্টুন এঁকে ফেলল, ইমরান নিজেকে নিজেই ছক্কা মেরে মাঠের বাইরে!

খালি বাংলাদেশই শিখলো না। প্রতিবার দেখি, ইনিংসের মাঝে স্পিন কিংবা স্লো বোলাররা এলেই ব্যাটসম্যানরা হয় মারতে যায়, (ইমরান খানের মতো হলে) আর নাহয় ঠেকায় - মাঝে মাঝে যাও বা শট খেলে, বেশিরভাগই ফিল্ডারের দিকে চলে যায় আর নাহয় ব্যাটের কানায়কুনায় লেগে এক/দুই হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে অলক কাপালীর ৯৩ বলে ৮৯ রানের সেই ইনিংস (কত সালে মনে নেই) দেখে মনে হলো, নাহ! বাংলাদেশও শিখছে।

কিন্তু কোথায়? আর তো কেউ পারছে না। মাঝখানে কার্ডিফে অষ্ট্রেলিয়াকে হারানোর সেই খেলায় আশরাফুল-বাশার জুটিতে সেই সিঙ্গেলস নেয়ার কারিশমা দেখেছিলাম। বিশ্বকাপে ভারত-বধেও তার ছিটেফোঁটা ছিল। কিন্তু ওই পর্যন্তই। ইদানিং অবশ্য দেখি, সাকিব আর রকিবুল যখন জুটি বাঁধে তখন রান ভালোই এগোতে থাকে। এখানে বলে রাখি, ক্রিজের দু'পাশেই যদি রান তোলায় চটপটে ব্যাটসম্যান না থাকে, তাহলে এক সাকিব বা এক রকিবুলও দ্রুত রান নিতে পারবে না। জুনায়েদ আর বাংলাদেশের ভাগ্য ভালো, আশরাফুল আজকে মাথা গরম করেনি।

কিন্তু ভাগ্যের ওপর আর কতদিন?

Friday, October 3, 2008

Kolponar Onuvuti

[বহু বছর আগে, স্কুলে যখন পড়তাম তখন একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম.... কোনো এক দূর দেশের ছোট্ট এক গ্রামে ছোট্ট আমি অনেক ভাই-বোনদের সাথে থাকতাম। কোনো এক অজ্ঞাত কারনে আমরা সবাই একেকদিকে ছিটকে পড়লাম। ন্বপ্নে সবই সম্ভব... তাই নিমেষে বড় হয়ে উঠলাম। একদিন রাস্তায় চলতে চলতে কোনো এক পরিচিত মুখ চোখে পড়ে যায়; হয়ত কোনো বোনের মুখ (এখন আর মনে নেই)। তাকে খুঁজে পেয়ে অন্যদেরও খুঁজে পেলাম (স্বপ্নের লীলাখেলা...)। 

এরপর আমাদের সে কি কান্না!!.... সেদিন সকালে আমার বালিশের একপাশ সম্পূর্ন ভিজে গিয়েছিল... ]

কল্পনার অনুভূতি

ক্ষনিকের কল্পনায় এসেছিলে তোমরা 
আদিম এক ভালোবাসা নিয়ে। 
কখনো সূর্য, কখনো মেঘরাশি, 
কখনো ঝড় নিয়েছিল ভাসিয়ে 

তবু হেসেছিলাম কল্পনায় 
হয়তো বাস্তবেও... 

হৃদয়ের টান কোথা হতে আসে? 
প্রকৃতি, একি খেলা তোমার! 
নিঃসঙ্গ অলসতায় বুকে টান লাগে - 
হয়ত কাল্পনিক তোমাদের, হয়ত বাস্তব আমার। 

তবু সুখ পেয়েছিলাম কল্পনায় 
হয়তো বাস্তবেও... 

স্মৃতি মলিন হয়; এইতো নিয়ম 
অনুভূতি থেকে যায় প্রখর - 
অপেক্ষার কষ্ট, মিলনের আনন্দ; 
অশ্রু বয়ে যায় অঝর! 

কেঁদেছিলাম সেদিন কল্পনায় 
... এবং বাস্তবেও। 


Sunday, September 28, 2008

Lojja

লজ্জা

মানুষ কতভাবেই না লজ্জা পেতে পারে। একভাবে চিন্তা করলে মনে হবে, অপরাধ করে ধরা পড়লে লজ্জা পেতে হয়। একটু অন্যভাবে চিন্তা করলে আরো কতকিছু বের হয়। কেউ স্কুল-কলেজের পরীক্ষায় খারাপ করে লজ্জা পায়, কেউ তার খারাপ চেহারার জন্য লজ্জা পায়, কেউ বা তার দারিদ্রের কারনে লজ্জা পায়। অভিজাতরা নিম্নবিত্তের সাথে মিশতে লজ্জা পায়, নববধূ তার স্বামীর দিকে তাকাতে লজ্জা পায়; কেউ কেউ বাংলাদেশী হতে লজ্জা পায়, আবার আমরা দুর্নীতিতে জি.পি.এ ৫ পেলেও লজ্জা পাই!

-----------------------------------------------------------

বাসা থেকে বের হয়েছি, মসজিদে যাবো। আজ জুমাতুল বিদা। আগে আগে বের হয়েছি মসজিদের ফ্যানের তলা ধরার জন্য। রাস্তায় থেমেই থমকে গেলাম। এক বৃদ্ধ আমার কাছে হাত পেতেছে। মানুষটা কোনো কথা বলেনি, তবে যে ভিক্ষা চাইছে - তা খুব সহজেই বুঝা যায়। চলার পথে এরকম কিছু মানুষ আমি দেখি, যারা মুখ ফুটে কিছু চায়না, চাহনি আর ভাবভঙ্গীতেই বুঝিয়ে দেয় তারা কী চায়।

তবুও এই মানুষটি আমার দৃষ্টি কাড়ে। ৬০-৬৫ বছরের বৃদ্ধ - বাম হাতের কব্জিতে একটা ছোট ব্যাগ ঝুলানো আর মুঠোয় ধরা একটা লাঠি যা তার চলার সঙ্গী। ডান হাতটা আমার দিকে বাড়ানো। সবই সাধারন! তাই কি?

তার পরনে একটা ধবধবে সাদা পাজামা, নিশ্চিতভাবেই আজকের বিশেষ দিন (জুমাতুল বিদা) উপলক্ষ্যে ধোয়া। আমার পরনে বাদামী ট্রাউজার; এটাও ধোয়া, তবে কোনো উপলক্ষ্যে নয়। বৃদ্ধের পাজামায় ইন করা সাদা আর সবুজের বড় বড় স্ট্রাইপের একটা পুরোনো হাফ হাতা গেঞ্জী, কিন্তু তার উজ্জ্বলতা আমার গায়ের সাদা ফিনফিনে গেঞ্জীকে হার মানিয়ে দিচ্ছে। মানুষটার মাথায় গোল টুপি; তার জাঁকজমকের কাছে আমার পকেটে রাখা টুপির কোনো তুলনাই হয়না।

আমার একটিবারও মনে হলোনা, এই সাদা পাজামার সাথে এই স্ট্রাইপ গেঞ্জী কোনোভাবেই খাপ খায় না, কোনোভাবেই 'ফ্যাশনেবল' নয়। মনে হলো, মানুষটা আজ একটা উৎসবে যাচ্ছে, আজকে একটা আনন্দের দিন, গুরুত্বপূর্ন দিন। আমার কাছে টাকা ছিলনা; কিন্তু থাকলেও দিতে পারতাম কিনা সন্দেহ আছে!

বৃদ্ধ দ্রুতই তার হাত সরিয়ে ফেলল; নিতান্ত অভ্যাসবলেই হয়ত আমার কাছে হাত পেতেছিলো। তারপর তার গন্তব্যের দিকে ধীর পায়ে হাঁটা শুরু করল। আর আমি? "কী জানি নেই, কিসের জানি অভাব" - এমন এক অনুভূতি নিয়ে; সেই "কী জানি" কী, তা আবিষ্কার না করেই মাথা নিচু করে উল্টোদিকে আমার গন্তব্যে হাঁটতে লাগলাম - একটু যেন দ্রুত লয়েই!


Saturday, September 27, 2008

Jhoro Bhalobasha

জীবনে এই প্রথম কোনো ব্লগে কি-বোর্ড (কলম নয়) ধরলাম... কী লিখবো বুঝতে পারছি না... তাই আপাতত একটা ক'লাইনের কবিতা 'কপি-পেস্ট' করে দিচ্ছি... আমার পরিচিত কেউ কেউ হয়ত এই ক'লাইন চিনতে পারবে....

ঝড়ো ভালোবাসা

ঝড়ের মাঝে জন্ম তোমার 
উড়িয়ে দিলে আমায় 
বৃষ্টিফোঁটা নকশী হলো 
আমার সাদা জামায় 
ঠান্ডা জলের হিম ছোঁয়াতে 
গায়ে কাঁপন ধরে 
অশ্রু ধারা তপ্ত গালে 
জলপ্রপাত গড়ে 
এলো বাতাস চুল নেড়ে যায় 
কোন সুদূরের ডাকে 
এলোমেলো মন যে খোঁজে 
পাই না খুঁজে যাকে 
মুষল ধারা হাতের মুঠোয় 
গড়ছে সরোবর 
অবুঝ আঁখি বুঝ মানে না 
কাঁদছে ঝরঝর 
কালবোশেখীর ঝড় যে নয় 
এক লহমায় শান্ত 
বর্ষাকালের বৃষ্টিও নয় 
থামতেও যে জানত 
মনের গহন ঝড় যে তুমি 
অসীম সর্বনাশী 
আহত, তবু... আর্ত আমি 
তোমায় ভালোবাসি...