লজ্জা
মানুষ কতভাবেই না লজ্জা পেতে পারে। একভাবে চিন্তা করলে মনে হবে, অপরাধ করে ধরা পড়লে লজ্জা পেতে হয়। একটু অন্যভাবে চিন্তা করলে আরো কতকিছু বের হয়। কেউ স্কুল-কলেজের পরীক্ষায় খারাপ করে লজ্জা পায়, কেউ তার খারাপ চেহারার জন্য লজ্জা পায়, কেউ বা তার দারিদ্রের কারনে লজ্জা পায়। অভিজাতরা নিম্নবিত্তের সাথে মিশতে লজ্জা পায়, নববধূ তার স্বামীর দিকে তাকাতে লজ্জা পায়; কেউ কেউ বাংলাদেশী হতে লজ্জা পায়, আবার আমরা দুর্নীতিতে জি.পি.এ ৫ পেলেও লজ্জা পাই!
-----------------------------------------------------------
বাসা থেকে বের হয়েছি, মসজিদে যাবো। আজ জুমাতুল বিদা। আগে আগে বের হয়েছি মসজিদের ফ্যানের তলা ধরার জন্য। রাস্তায় থেমেই থমকে গেলাম। এক বৃদ্ধ আমার কাছে হাত পেতেছে। মানুষটা কোনো কথা বলেনি, তবে যে ভিক্ষা চাইছে - তা খুব সহজেই বুঝা যায়। চলার পথে এরকম কিছু মানুষ আমি দেখি, যারা মুখ ফুটে কিছু চায়না, চাহনি আর ভাবভঙ্গীতেই বুঝিয়ে দেয় তারা কী চায়।
তবুও এই মানুষটি আমার দৃষ্টি কাড়ে। ৬০-৬৫ বছরের বৃদ্ধ - বাম হাতের কব্জিতে একটা ছোট ব্যাগ ঝুলানো আর মুঠোয় ধরা একটা লাঠি যা তার চলার সঙ্গী। ডান হাতটা আমার দিকে বাড়ানো। সবই সাধারন! তাই কি?
তার পরনে একটা ধবধবে সাদা পাজামা, নিশ্চিতভাবেই আজকের বিশেষ দিন (জুমাতুল বিদা) উপলক্ষ্যে ধোয়া। আমার পরনে বাদামী ট্রাউজার; এটাও ধোয়া, তবে কোনো উপলক্ষ্যে নয়। বৃদ্ধের পাজামায় ইন করা সাদা আর সবুজের বড় বড় স্ট্রাইপের একটা পুরোনো হাফ হাতা গেঞ্জী, কিন্তু তার উজ্জ্বলতা আমার গায়ের সাদা ফিনফিনে গেঞ্জীকে হার মানিয়ে দিচ্ছে। মানুষটার মাথায় গোল টুপি; তার জাঁকজমকের কাছে আমার পকেটে রাখা টুপির কোনো তুলনাই হয়না।
আমার একটিবারও মনে হলোনা, এই সাদা পাজামার সাথে এই স্ট্রাইপ গেঞ্জী কোনোভাবেই খাপ খায় না, কোনোভাবেই 'ফ্যাশনেবল' নয়। মনে হলো, মানুষটা আজ একটা উৎসবে যাচ্ছে, আজকে একটা আনন্দের দিন, গুরুত্বপূর্ন দিন। আমার কাছে টাকা ছিলনা; কিন্তু থাকলেও দিতে পারতাম কিনা সন্দেহ আছে!
বৃদ্ধ দ্রুতই তার হাত সরিয়ে ফেলল; নিতান্ত অভ্যাসবলেই হয়ত আমার কাছে হাত পেতেছিলো। তারপর তার গন্তব্যের দিকে ধীর পায়ে হাঁটা শুরু করল। আর আমি? "কী জানি নেই, কিসের জানি অভাব" - এমন এক অনুভূতি নিয়ে; সেই "কী জানি" কী, তা আবিষ্কার না করেই মাথা নিচু করে উল্টোদিকে আমার গন্তব্যে হাঁটতে লাগলাম - একটু যেন দ্রুত লয়েই!
মানুষ কতভাবেই না লজ্জা পেতে পারে। একভাবে চিন্তা করলে মনে হবে, অপরাধ করে ধরা পড়লে লজ্জা পেতে হয়। একটু অন্যভাবে চিন্তা করলে আরো কতকিছু বের হয়। কেউ স্কুল-কলেজের পরীক্ষায় খারাপ করে লজ্জা পায়, কেউ তার খারাপ চেহারার জন্য লজ্জা পায়, কেউ বা তার দারিদ্রের কারনে লজ্জা পায়। অভিজাতরা নিম্নবিত্তের সাথে মিশতে লজ্জা পায়, নববধূ তার স্বামীর দিকে তাকাতে লজ্জা পায়; কেউ কেউ বাংলাদেশী হতে লজ্জা পায়, আবার আমরা দুর্নীতিতে জি.পি.এ ৫ পেলেও লজ্জা পাই!
-----------------------------------------------------------
বাসা থেকে বের হয়েছি, মসজিদে যাবো। আজ জুমাতুল বিদা। আগে আগে বের হয়েছি মসজিদের ফ্যানের তলা ধরার জন্য। রাস্তায় থেমেই থমকে গেলাম। এক বৃদ্ধ আমার কাছে হাত পেতেছে। মানুষটা কোনো কথা বলেনি, তবে যে ভিক্ষা চাইছে - তা খুব সহজেই বুঝা যায়। চলার পথে এরকম কিছু মানুষ আমি দেখি, যারা মুখ ফুটে কিছু চায়না, চাহনি আর ভাবভঙ্গীতেই বুঝিয়ে দেয় তারা কী চায়।
তবুও এই মানুষটি আমার দৃষ্টি কাড়ে। ৬০-৬৫ বছরের বৃদ্ধ - বাম হাতের কব্জিতে একটা ছোট ব্যাগ ঝুলানো আর মুঠোয় ধরা একটা লাঠি যা তার চলার সঙ্গী। ডান হাতটা আমার দিকে বাড়ানো। সবই সাধারন! তাই কি?
তার পরনে একটা ধবধবে সাদা পাজামা, নিশ্চিতভাবেই আজকের বিশেষ দিন (জুমাতুল বিদা) উপলক্ষ্যে ধোয়া। আমার পরনে বাদামী ট্রাউজার; এটাও ধোয়া, তবে কোনো উপলক্ষ্যে নয়। বৃদ্ধের পাজামায় ইন করা সাদা আর সবুজের বড় বড় স্ট্রাইপের একটা পুরোনো হাফ হাতা গেঞ্জী, কিন্তু তার উজ্জ্বলতা আমার গায়ের সাদা ফিনফিনে গেঞ্জীকে হার মানিয়ে দিচ্ছে। মানুষটার মাথায় গোল টুপি; তার জাঁকজমকের কাছে আমার পকেটে রাখা টুপির কোনো তুলনাই হয়না।
আমার একটিবারও মনে হলোনা, এই সাদা পাজামার সাথে এই স্ট্রাইপ গেঞ্জী কোনোভাবেই খাপ খায় না, কোনোভাবেই 'ফ্যাশনেবল' নয়। মনে হলো, মানুষটা আজ একটা উৎসবে যাচ্ছে, আজকে একটা আনন্দের দিন, গুরুত্বপূর্ন দিন। আমার কাছে টাকা ছিলনা; কিন্তু থাকলেও দিতে পারতাম কিনা সন্দেহ আছে!
বৃদ্ধ দ্রুতই তার হাত সরিয়ে ফেলল; নিতান্ত অভ্যাসবলেই হয়ত আমার কাছে হাত পেতেছিলো। তারপর তার গন্তব্যের দিকে ধীর পায়ে হাঁটা শুরু করল। আর আমি? "কী জানি নেই, কিসের জানি অভাব" - এমন এক অনুভূতি নিয়ে; সেই "কী জানি" কী, তা আবিষ্কার না করেই মাথা নিচু করে উল্টোদিকে আমার গন্তব্যে হাঁটতে লাগলাম - একটু যেন দ্রুত লয়েই!